Friday, September 28, 2018


 ♥আমার ভালোবাসা বুঝলেনা ♥

আরিফ জামান

(পার্ট-৯)


এই শুনছো!!! আথনুক বাথরুম থেকে জবাব দিল হ্যা বল! তুমি না আদ্রিতাকে স্কুলে নিয়ে যাও!! হ্যা যাব, আমার নাস্তা রেডি কর! ছায়া আবারো ডাকছে এই শুনছো!!! বাথ রুমে কি সারাদিন লাগিয়ে দেবে নাকি শুনি!! একটু তাড়াতাড়ি কর নয়তো আদ্রিতার স্কুলের দেরি হয়ে যাবে! আরে বাবা আমাকে গোসল টাও করতে দেবে না নাকি!!! তারাতারি কর!!! ছায়ার পালা শেষ এবার আদ্রিতা আথনুককে ডাকছে বাবা, এই বাবা!! আথনুক বাথরুম থেকে মাথা বের করে তার ছোট্ট মেয়েটাকে বললো জি আম্মা জান, আমার স্কুলের দেরি হয়ে যাচ্ছে তুমি তারাতারি কর নয়তো আমার দেরি হয়ে যাবে

হটাত করে দরজায় নক করে কে জেন ডাকছে আথনুকের ঘুম ভেঙে গেল। আথনুক চমকে উঠে ইজি চেয়ারে বসে পরলো আথনুক ভাবছে এতক্ষণ আদ্রিতা আর ছায়াকে নিয়ে যেগুলো দেখলো সেগুলো কি স্বপ্ন ছিল, ছায়ার ঘুম ভেঙে গেছে ছায়া বাথরুমে থেকে বের হয়ে আসলো আথনুক ছায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে স্বপ্নের কথা ভেবে মুচকি হেসে বললো ছায়া তুমি কখন উঠেছো? এইতো কিছুক্ষণ আগে, আমাকে ডাকোনি কেন? তুমি ঘুমোচ্ছিলে তাই ডাকিনি, আথনুক আবারো হাসলো ছায়া আথনুককে জিজ্ঞেস করলো হাসছো কেন? না এমনিতেই, হাসতে হাসতে আথনুক দরজা খুলতে গেলো, একজন নার্স এসে বললো আপনার রুগীর রিলিজ হয়ে গেছে আপনি হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে রুগীকে বাসায় নিয়ে যাবেন, আথনুক ছোট্ট করে গলা নামিয়ে বললো ঠিক আছে

নার্স চলে যাওয়ার পরে পরেই তুষার রুমে প্রবেশ করলো, তুষার রুমে ঢুকেই আথনুককে বললো কিরে তুই রাতে ঘুমাস নাই নাকি? মানে? বললাম তুই সারারাত কি জেগে ছিলি নাকি? ছায়া এই কথা শুনে বললো আথনুক রাত জেগে আমার যে সেবা যত্ন করেছে তা তুইও করবিনা, তাই? হ্যা, আথনুক হেসে বললো আরে না এটা আমার কর্তব্য, তুষার বললো কর্তব্য না অন্য কিছু? মানে? ছায়া ব্যাপারটা বুঝতে পেরে লজ্জায় মাথা নিচু করলো। আথনুকেরও একই অবস্থা। তুষারের একটা বাজে স্বভাব সে সবসময়ই ইয়ারকি করে

আথনুক তুষারকে বললো তুই এবার বক বক না করে ছায়ার নাস্তা বের করে ওকে খাওয়াতে সাহায্য কর আমি দেখেছি ছায়ার রিলিজের কাগজ পত্র নিয়ে আসছি। ঠিক আছে, আথনুক তুষার আর ছায়াকে রেখে নার্সের রুমে চলে গেল। এদিকে ছায়া অনেক দিন পর বাসায় ফিরবে বলে তাই সে হাসপাতালে গোসল করে নিল। আথনুক সবকিছু ঠিকঠাক করে এসে তুষারকে বললো কিরে তোরা রেডি হয়েছিস? হ্যা আমি মোটামুটি সব কিছু গুছিয়ে নিয়েছি ছায়া গোসল করে বেরিয়ে এলেই আমরা বেরিয়ে পরবো। তুষার আথনুককে বললো ছায়া গোসল করতে করতে তুই নাস্তা করে নে, নারে আমি একবারে বাসায় গিয়ে গোসল করে তারপর নাস্তা করবো। তুষার আথনুককে বললো ব্যাটা! বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক দেরি হবে তুই নাস্তা করে নে

হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে হাসপাতাল থেকে বের হতে প্রায় এগারোটা বেজে গেল। আথনুক যদিও ছায়ার সাথ ছারতে চাচ্ছিলনা তারপরও সে তুষার আর ছায়াকে একটা হলুদ ট্যাক্সি ক্যাবে তুলে দিয়ে বললো তোরা যা আমি বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিকেলে আসবো। তুষার রেগে গিয়ে বললো কেন আমাদের সাথে গিয়ে আমার বাসা থেকে নাস্তা করে পরে বাসায় যাওয়া যাবেনা? আথনুক বললো দোস্ত দেখ please রাগ করিসনা আমি কালকে থেকে বাসায় যাইনি এখনো যদি না যাই তাহলে আম্মু চিন্তা করবে তাছাড়া আমি তো বিকেলে আসবো তাইনা? ঠিক আছে তুই বাসায় যা। তবে বিকেলে আন্টিকে সাথে নিয়ে আসিস, ঠিক আছে আসবো

আথনুক তুষার আর ছায়াকে বিদায় দিয়ে বাইক নিয়ে বাসায় ফিরে গোসল করে নাস্তা করে ঘুমিয়ে পরলো। ঠিক তিনটার দিকে ফোনের আওয়াজে আথনুকের ঘুম ভেঙে গেল। আথনুক ফোন রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে জবাব দিল ছায়া, ছায়া আথনুককে জিজ্ঞেস করলো তুমি আন্টিকে নিয়ে কখন আসবে? আথনুক বললো পাচটা বা ছয়টা বাজতে পারে। ঠিক আছে দেরী করিওনা তারাতারি আসিও, কেন? আগে আসতো, না! আগে বলো, এখন না তুমি আসো তারপর আমি তোমাকে একটা সারপ্রাইজ দিব। তাই? হ্যা, কি সারপ্রাইজ বলোনা please...... না বলা যাবেনা। এই বলে ছায়া ফোন লাইন কেটে দিল

আথনুক ফোন রেখে বিছানায় শুয়ে ভাবছে ছায়া কি এমন জিনিস তাকে সারপ্রাইজ দিতে চাচ্ছে। আথনুক আর দেরি না করে দুপুরের খাবার খেয়ে আম্মুকে রেডি হতে বলে সে মার্কেটে গেল, আথনুক ভাবলো ছায়া কি তাকে প্রপোজ করবে কিনা তাই সে ছায়ার জন্য একটা "লাভ" কার্ড কিনলো সাথে একটা লাল গোলাপের স্টিক কিনে নিল সাথে একটা পায়েল কিনে সুন্দর করে প্যাকেট করলো। আথনুক বাসায় ফিরে গিফ্টের প্যাকেটটা আন্টিকে না দেখিয়ে লুকিয়ে নিল এবং বললো আম্মু চল দেরী হয়ে যাচ্ছে, আব্বু তুই একটু বস আমি ছায়ার জন্য একটু স্যুপ বসিয়েছি ঐটা হলেই বের হব

ঠিক ছয়টার সময় আথনুক তার আম্মুকে নিয়ে তুষারের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। আথনুককে একটা চিন্তা বারবার তার মাথায় খোচা দিচ্ছে সারা রাস্তায় তার মাথায় শুধু একটা প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে ছায়া তাকে কি এমন জিনিস সারপ্রাইজ দিবে। গাড়ি যতই তুষারের বাসার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে আথনুকের নিঃশ্বাস ততই ছোট হয়ে আসছে। আথনুক এখন শুধু অপেক্ষা করছে গাড়িটা কখন গিয়ে ছায়ার বাসার নিচে দারাবে।



নোট: গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!


No comments:

Post a Comment