♥ আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ জামান
(পার্ট-২৯)
আথনুক এবং রামিশা
তারা দুজনে ছায়ার বাড়ির
উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে ঠিকই
কিন্তু মাঝ পথে রাত
হয়ে যাওয়ার কারণে তাদের
দুজনকে করিম চাচার বাসায়
উঠতে হয়েছে। করিম
চাচা আথনুক এবং রামিশাকে
স্বামী স্ত্রী হিসেবেই জানেন। আথনুক এবং
রামিশা যদিও দুজন স্বামী
স্ত্রী না তারপরও বিপদ
কাটানোর জন্য তাদের দুজনকে
অভিনয় করতে হচ্ছে।
অপরিচিত মানুষ হিসাবে করিম চাচা তাদের
দুজনকে অনেক সাহায্য করেছেন। আথনুক এবং
রামিশা করিম চাচার দোকানে
গিয়ে দাড়িয়ে ছিলো তখন
দোকানের সামনে তিন চার
জন বয়স্ক ভদ্রলোক ছিলো
তাদের মধ্যে একমাত্র করিম
চাচা আথনুক এবং রামিশাকে
বাসায় নিয়ে এসেছেন।
করিম চাচা
গ্রামের মানুষ হলেও শহরের
মানুষকে কিভাবে আপ্যায়ন করতে
হয় সেটা তিনি জানেন। করিম চাচা খুব ভালো মানুষ।
আথনুক বাথরুম থেকে
বের হয়ে দেখলো রামিশা
ঘুম থেকে উঠে বিছানার
উপর বসে আছে। আথনুক রামিশাকে জিজ্ঞেস
করলো কি! ঘুম ভেঙ্গেছে
? তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও
বের হতে হবে। রামিশা কিছু না
বলে যখন বিছানা থেকে
নামতে গেলো তখন নুপুরের
আওয়াজ শুনে তার চোখ
পায়ের দিকে গেল। দুই পায়ে নুপুর দেখে অবাক হয়ে গেল। রামিশা
কিছু বলার আগেই আথনুক বলল
এটা ছায়ার জন্য বানিয়ে
ছিলাম। ভেবেছিলাম
ছায়াকে দিবো কিন্তু ছায়া
অন্য কারো হয়ে গিয়েছে। তাই
ভাবলাম ছায়া যখন নাই
তখন এটা ব্যাগে ফেলে
রেখে লাভ কি? তাই
তোমার পায়ে পরিয়ে দিয়েছি। কোনো ভুল করেছি
? কিন্তু
আমরাতো ছায়ার কাছে যাচ্ছি
তখন তাকে দিয়ে দিলে
হতো না ? না, কেন
? যে আমার কথা বিন্দু
মাত্র চিন্তা না করে
অন্যের সাথে বিয়ের পিড়িতে
বসেছে তাকে উপহার দিয়ে
আমি আমার ভালবাসাকে অপমান
করতে চাই না। নুপুর ভালো না লাগলে আমাকে দিয়ে দাও,
নুপুর জোড়া রামিশার ভীষণ
পছন্দ হয়েছে তাই সে
বলল অনেক সুন্দর নুপুর আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। যদি তাই হয় তাহলে পায়ে থেকে খোলার প্রয়োজন নেই
পায়ে পরে থাকো। তাছাড়া এই নুপুর জোড়া তোমার পায়ে ভীষণ মানিয়েছে। রামিশা
আথনুককে ধন্যবাদ দিয়ে
বাথরুমে চলে গেল।
ঠিক সকাল নয়টার সময় দুজনে তৈরী হয়ে ঘর থেকে বের হলো। রামিশা
এবং আথনুককে বের হতে
দেখে করিম চাচা এগিয়ে
আসলো। করিম চাচা
আথনুককে জিজ্ঞেস করলো
বাবাজি এতো তাড়াতাড়ি বের
হয়েছেন কেন? আরও দুই
দিন আমার বাসায় থেকে
তারপর না হয় যাবেন। না চাচা, আজকে আর না, অন্য কোনো এক সময় এসে
থেকে যাবো আজকের মতো আমাদেরকে বিদায় দিন। বাবাজি আমি তেমন কোনো খেদমত করতে পারিনাই আশা করি মনে কিছু নিবেন না। চাচা আপনি আমাদের জন্য যা করেছেন এতেই আমরা ভীষণ খুশি হয়েছি। আপনার এই উপকারের কথা আমরা সারাজীবন মনে রাখবো। আথনুক একটা
কাগজে তার বাবার নাম
ঠিকানা লিখে করিম সাহেবের
হাতে দিলো এবং বলল
চাচা আপনি কখনো ঢাকায়
আসলে আমার বাসায় অবশ্যই
আসবেন। আপনি
পরিবারকে নিয়ে আমার বাসায় আসলে আমি ভীষণ খুশি হবো। আচ্ছা বাবাজি
আসবো। আথনুক এবং
রামিশা একে একে সবার
কাছ থেকে বিদায় নিয়ে
আবার তাদের গন্তব্য স্থানের
উদ্দেশে রওয়ানা দিলো।
দীর্ঘ চার ঘন্টা বাইক চালানোর পর আথনুক এর
বাইক ছায়ার বাসার কাছে
একটা বাজারে এসে দাড়ালো। আথনুক একটা দোকানের পাশে দাঁড়িয়ে এক বয়স্ক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করলো
আংকেল এখানে রবিনের বাসা কোথায়? ওই সামনে গিয়ে ডানে মোড় ঘুরে প্রথম বাড়ির পরেই যে বিশাল
বিল্ডিং বাড়ি ওটাই রবিনের বাড়ি, কিন্তু! আপনি কে? আপনাকে তো ঠিক চিনলাম না বাবাজি!
আমি রবিনের বন্ধু ঢাকা থেকে এসেছি, আপনি কি রবিনের বিয়েতে এসেছেন? জি! কিন্তু আংকেল
আপনি কে? আমি রবিনের চাচা, বাজারে এসেছি, ও আচ্ছা! আংকেল তাহলে আমরা যাই? ঠিক আছে বাবাজি
আপনারা যান আমি ওরে ফোন করে বাসার সামনে আসতে বলছি। ঠিক আছে
আংকেল। আথনুক এর বাইক
ছায়ার বাসার সামনে গিয়ে
দাঁড়াতেই রবিন এবং তার পরিবারের সবাই
এসে আথনুক
এবং রামিশাকে স্বাগতম জানালো। রবিন
শুভেচ্ছা বিনিময় করে আথনুককে জিজ্ঞেস করল আমি যদি ভুল না করি তাহলে আপনি আথনুক? জি আমি আথনুক, আর উনি কে? ও রামিশা, আমার বন্ধু, আপনার
কথা আমি ছায়ার মুখে অনেক শুনেছি।
আথনুক
এবং রামিশার সাথে একে একে বাসার সবাই শুভেচ্ছা
বিনিময় করলো কিন্তু ছায়া আর তুষার তারা কেউ তার সামনে আসলোনা। রবিন
আথনুক
এবং রামিশাকে নিয়ে যখন বাসার গেটে প্রবেশ করছিল
তখন হঠাৎ ছায়া কোথা থেকে যেন দৌড়ে হাঁপিয়ে
এসে তার সামনে দাঁড়ালো।।