♥আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ জামান
(পার্ট-১৪)
ছায়ার
কাছ থেকে ট্যাক্সির দূরত্ব যতই বাড়ছে আথনুক তত বেশি ভেঙে পড়ছে, আথনুক নিজেও বুঝতে পারছেনা
সে কি করবে। আথনুক এই প্রথম তার ভালোবাসার
মানুষটির চোখে পানি দেখলো যা তার এই কাজটি করা মোটেও উচিত হয়নি। আথনুক ছায়াকে বলছে ছায়া
তুমিতো চোখ দিয়ে পানি ঝরিয়ে তোমার মনকে সান্তনা দিচ্ছ কিন্তু! এই হতভাগা তাও পারছেনা
মনের দুঃখ মনে চেপে একটু একটু করে হজম করছে। তুমি হয়তোবা একটু সময় কেঁদে মনের দুঃখ মুছে ফেলে সারারাত আরামে ঘুমাবে কিন্তু! আমি বিছানার উপর শুয়ে গলাকাটা মুরগীর মত ছটপট করবো। তুমি তোমার দুঃখ গুলো প্রকাশ করতে পারো কিন্তু! আমি এমনি একজন মানুষ আমার মনের দুঃখ গুলো কারো কাছে না পারি কৈতে না পারি সৈতে।
কিন্তু তারপরো আমি হাসি মুখে বলি আমার যতো কষ্টই হোকনা কেন আমি তোমাকে সবসময় খুশি দেখতে চাই। ছায়া তুমি বিশ্বাস করো আজকে আমি তোমাকে কাঁদতে চাইনি আমি যখন খাবার টেবিল
থেকে উঠে বড় মুখ করে তোমাকে ডাকতে যাচ্ছিলাম তখন তুষার আমাকে একটা কথা বলেছে “কোনো
লাভ নেই ও আসবেনা কারণ আমি ওকে ডেকে এসেছি সে বলেছে পরে খাবে” আমি তুষারের এই কথা গায়ে
না লাগিয়ে অনেক গর্বের সাথে তোমাকে ডাকতে গিয়েছিলাম কিন্তু তুমি যখন তুষার এবং আমাকে
একই পাল্লায় রাখলে তখন আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি।
মনের কষ্ট গুলো একটু একটু করে হজম করতে করতে কখন যে ট্যাক্সি ক্যাব বাসার নিচে এসে পৌঁছে গিয়েছে আথনুক নিজেও জানে
না। হঠাৎ আথনুক… আথনুক…. করে কে যেন ডাকছে। আথনুক চমকে উঠে তাকিয়ে দেখে
বাসার নিচে ট্যাক্সি ক্যাব দাড়িয়ে আছে আর জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আথনুকের আম্মু ডাকছে
আথনুক…! এই আথনুক….! বাসায় পৌঁছে গিয়েছি ট্যাক্সি থেকে নেমে পর বাবা….! এই বলে আম্মু
উপরে চলে গেলো। আথনুক মন খারাপ করে ট্যাক্সি
ক্যাব থেকে নেমে ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে উপরে চলে গেলো।
আজকে
আথনুকের মন ভিশন খারাপ কারণ সে তার ভালোবাসার মানুষকে কাঁদিয়েছে তাই সে রুমের বাতি
না জ্বালিয়ে অন্ধকারের মধ্যে বিছানার উপর শুয়ে পড়ল। হঠাৎ করে ঘরে আলো জ্বলে
উঠলো আথনুক লক্ষ্য করলো টেবিলের উপর রাখা তার মোবাইলের আলো জলছে অন্ধকার ঘর মোবাইলের
আলোতে একটু আলোকিত হয়েছে। আথনুক সেই আলোতে দেয়ালে থাকা দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত
১২:৪৫ বাজে। আথনুক বুঝতে পেরেছে এতো
রাতে তাকে কে ফোন করেছে তাই সে উঠে ফোন ধরতে গেল কিন্তু ফোন ধরা দেরি হওয়াতে মিসকল
হয়ে গেলো। আথনুক ফোনের ওকে বাটন চাপ
দিতেই দেখে ফোনে ১৩টি ম্যাসেজ এবং ২৮টি মিসকল হয়ে রয়েছে। (আথনুকের ফোন সাইলেন করা
থাকতে সে বুঝতে পারেনি যে তার ফোন বাজছে)।
আথনুক
ফোন হাতে নিয়ে প্রথম এসএমএস টি ওপেন করলো। এসএমএস টিতে লেখা ছিল (Sorry…… আমার ভুল হয়েছে আমাকে ক্ষমা করে দাও)। ছায়া এসএমএস এর কোনো উত্তর না
পেয়ে ঠিক ২ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের মাথায় আবার একটি (দ্বিতীয়) এসএমএস করেছে। ( বোল্লাম-তো Sorry…… আমার
ভুল হয়েছে আমাকে ক্ষমা করে দাও)। ছায়া এবারও এসএমএস এর কোনো উত্তর না পেয়ে ঠিক ৪ মিনিট ২২ সেকেন্ড পর (তৃতীয়) এসএমএস টি করলো। ( এই আমি কানে ধরছি আর ভুল হবেনা এবার এসএমএস এর উত্তর দাও Please……!) আথনুক যখন
তার ভালোবাসার মানুষটির এসএমএস গুলো পড়ছিলো তখন তার চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল এবং পাগলিটার
কথা গুলো পরে মনে হৃদয়ের ভিতর অফুরন্ত ভালোবাসা জন্ম নিচ্ছিলো। আথনুক এবার চতুর্থ এসএমএসটি
ওপেন করলো। ছায়া এই এসএমএস টা করেছে ঠিক ৫ মিনিট ৫৭ সেকেন্ড পর, দেখ! (যদি তুমি এসএমএস
এর উত্তর না দাও তাহলে আমি কিন্তু কান্না করবো)। ছায়া এভাবে একের পর এক মোট ১৩ টি এসএমএস করেছে যা আথনুকের ছোট্ট একটি ভুলের কারণে ছায়ার মায়া ভরা এসএমএস এর
উত্তর দিতে পারেনি আর সেই ভুলটি ছিলো সে তার ফোনটি সাইলেন্ট করে রেখেছিলো। কিন্তু! সর্ব শেষ এসএমএসটি আথনুক যখন ওপেন
করলো সেই এসএমএস টিতে আথনুক যে জিনিসটা দেখতে পেলো সেটা ছিল তার কল্পনার বাহিরে।।
No comments:
Post a Comment