♥আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ
জামান(পার্ট-২০)
সবাই যখন পাশের ঘরে নাস্তা খেতে ব্যস্ত আথনুক তখন রামিশার মুখ থেকে ছায়ার সম্পর্কে জানার জন্য ব্যস্ত। কিন্তু! সমস্যা হলো রামিশা কিছুতেই মুখ খুলছে
না। আথনুক
বুঝতে পারছেনা এমন কি ঘটনা ঘটেছে যে রামিশা তাকে বলতে চাচ্ছেনা। আথনুক ভাবলো রামিশার আশায় এভাবে চুপ করে
শুয়ে থাকলে হবেনা তাকে নিজেকেই কিছু একটা করতে হবে। আথনুক রামিশা কে বলল আপু আপনি একটু আম্মুকে
ডেকে দিন আমরা বাসায় চলে যাবো।
রামিশা একটু চমকে উঠলো, জিজ্ঞেস করলো এই অবস্থায় আপনি কিভাবে বাসায়
যাবেন? সমস্যা নেই আমি সুস্থ ফিল করছি তাছাড়া আমি তো রয়েছে, কাল সকালে যাও
? না অপু, এমনিতেই অনেক
দেরি হয়ে গিয়েছে আর একটু দেরি হলে হয়তোবা ছায়াকে আমার সারা জীবনের জন্য হারাতে হবে
তাই আমি এখনি ছায়ার খোঁজে বের হতে চাই।
আপনি ছায়াকে ভীষন ভালোবাসেন তাইনা?
হুম!
আথনুক যখন তার বুকে লুকিয়ে রাখা ছায়া এবং তার গভীর ভালোবাসার কথাগুলো
রামিশা কে বলছিলো তখন রামিশার চোখ দিয়ে টপটপ করে জল ঝরছিলো এবং রামিশা মনে মনে ভাবছিলো
আথনুক তুমি হয়তোবা জানো না তুমি ছায়াকে
সারা জীবনের জন্য হারিয়ে ফেলেছো।
কারণ আজ ঠিক দুপুর বারোটার সময় ছায়ার
সাথে রবিনের দেশের বাড়িতে বিয়ে হওয়ার কথা। “রবিন দুবাইতে থাকে”
রবিন ছায়াকে বিয়ে করার জন্য গতকাল ঢাকায় এসেছে। “রবিন
ছায়ার আপন চাচাতো ভাই” ছায়ার
আব্বু আম্মু মারা যাওয়ার পর সে তার খালার বাসায় থেকে লেখাপড়া করলেও লেখাপড়ার খরচ রবিন
বহন করতো। শুধু তাই নয়! রবিন দুবাই থেকে প্রতিদিন রাতে ফোন করে ছায়ার খোজ খবর নিত। এবং বিভিন্ন সময়ে বিদেশ থেকে ছায়ার জন্য জিনিসপত্র পাঠিয়ে দিত। কাজী অফিসে গিয়ে
দুজন সাক্ষী রেখে কালেমা পরে অন্য
দশ জনের মতো তাদের দু জনের বিয়ে না হলেও রবিন
ছায়াকে নিজের স্ত্রীর মতোই মানত।
রবিন মাঝে মাঝে
ছায়ার
সাথে এমন আচরণ করতো মনে হতো ছায়া তার বিবাহিত স্ত্রী। রবিনের এই আচরণে
ছায়ার-ও কিছু করার ছিলনা কারণ খাঁচার পাখির মতোই তার হাত পা বাঁধা ছিল। আব্বু আম্মুকে হারানোর পর
রবিন তার দেখা শুনা করেছে তাই সে ইচ্ছে করলেও শুধু আথনুক কেন অন্য কারো
কথা ভাবার অধিকার তার নেই। ছায়া ভালো করে জানে পৃথিবীতে এতিম বা অসহায়ত্ব মানুষ গুলোকে ঠিক কাঠের পুতুলের মতো অন্যের কথায়
ওঠা বসা করতে হয়। ভালোবাসা তো দূরের কথা!!
ছায়া গতকাল
বাসা থেকে যখন বের হয় তখন হাতে লেখা একটি চিঠি রামিশা কে দিয়ে ছায়া বলেছিলো “আপু আমি
ভালো করে জানি আথনুক আমার ফোন বন্ধ পেয়ে আগামীকাল আমার বাসায় আসবে আর সে আসলে আপনি
কষ্ট করে এই চিঠিটা আথনুককে
দিয়ে বলবেন সে যেন ভুলেও আমাকে খোঁজার চেষ্টা না করে”। রামিশা বুঝতে পারছেনা সে এখন কি করবে!!
আথনুক ছায়ার কথা সোনার জন্য ব্যাকুল হয়ে রয়েছে কিন্তু এই মুহূর্তে আথনুকের শরীরের অবস্থা
বেশি একটা ভালোনা তাছাড়া “ডাক্তার” নাজিম আংকেল বলেছেন ওর বেশি টেনশন করা যাবেনা নয়তো
বিরাট একটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
এর মধ্যে ছায়ার চিঠি কিভাবে দেই।
রামিশা বুদ্ধি করে আথনুককে বললো ভাইয়া আপনি কোনো চিন্তা করিয়েন
না আমার এক বান্ধবী জানে ছায়া কোথায় আছে কারণ ও ছায়ার বান্ধবী, এই মুহূর্তে ওর ফোন বন্ধ পাচ্ছি
ওর বাসা কাছে আপনি এখন একটু ঘুমান আমি এর মধ্যে ওর বাসায় গিয়ে ওর সাথে কথা বলে ছায়া
সম্পর্কে সব তথ্য নিয়ে এসে আপনাকে দিব।
এটা আমার ওয়াদা!!
রামিশার কথা শুনে আথনুক কিছুটা নরম হয়ে চুপ করে গেল। আথনুক রামিশার কথা শুনে তার মনকে সান্তনা
দিলেও রামিশা কোনো কিছুতেই তার মনকে সান্তনা দিতে পারছেনা কারণ আগামীকাল রামিশা যখন
ছায়ার লেখা চিঠি আথনুককে দেবে তখন কি হবে কে জানে।।
No comments:
Post a Comment