Saturday, September 29, 2018






আমার ভালবাসা বুঝলেনা


আরিফ জামান


(পার্ট-১২)



কারেন্ট চলে যাওয়ায় ঘরে কোনো আওয়াজ নেই শুধু আধার ঘরে দুজনের ভারী নিঃশ্বাসের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। ছায়া বিছানার উপর শুয়ে আছে আথনুক ছায়ার দিকে ঝুকে তার দুটি হাত শক্ত করে ধরে ছায়ার মুখের দিকে মুখ নিয়ে ছায়ার অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করছে। যদিও ঘরটা আধার শুধু ভারী নিঃশ্বাসের আওয়াজ ছাড়া আর কিছুই ঠিক মত বোঝা যাচ্ছেনা আথনুক তারপরও জানালা দিয়ে রুমে আশা চাঁদের আলোতে আবছা আবছা দেখতে পাচ্ছে ছায়া কোমল মলিন টানা টানা চোখ দুটো বন্ধ করে গোলাপের পাপড়ির মত ঠোঁট দুটো কাঁপাচ্ছে



আথনুক ছায়ার মায়াবী মুখের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ছায়াকে প্রশ্ন করছে এই মিস্টি মেয়ে কে তুমি? কেন তোমাকে আমার এত ভালো লাগে ? কেন তোমাকে এক মুহূর্ত না দেখে থাকতে পারিনা ? কেন দিন রাত তুমি আমাকে এভাবে তারা করে বেড়াও ? তোমার সাথে আমার কিসের সম্পর্ক ? Please……… এভাবে চুপ করে থেকোনা আমার প্রশ্নের উত্তর দাও আমি যে আর পারছিনা, আমি তোমার গোলাপের পাপড়ির মত ঠোঁট দুটো দিয়ে ছোট্ট তিনটি শব্দ একটিবার শুনতে চাই “ I Love You ” Please……বলোনা……….!! একটিবার বলনা.........যে কথাটি শোনার জন্য এই পাগল প্রেমিক বেকুল হয়ে রয়েছে



কারেন্ট চলে এসেছে, আথনুক ছায়ার হাত ছেড়ে দিয়ে মুখ উপরের দিকে করে চিৎ হয়ে ছায়ার পাশে শুয়ে তার হাজারো প্রশ্ন গুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করলো কিন্তু তার বিরহ ব্যথা ছায়া বুঝেও না বোঝার ভান করে চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে রইলো। ছায়া জানেনা তার এই নীরবতা আথনুককে কতটুকু কষ্ট দেয়






পাশের ঘর থেকে তুষার আথনুককে ডাকছে আথনুক…..এই আথনুক!! তুষারের গলার আওয়াজ শুনে আথনুক দ্রুত উঠে ঘর থেকে বের হয়ে ডাইনিং রুমে চলে এলো। তুষার আথনুককে দেখে জিজ্ঞেস করলো কিরে কিছু হলো ? আথনুক বলল মানে!! কি বলতে চাচ্ছিস তুই ?? মানে খুব সোজা!! আমি বলতে চাচ্ছি তুই ছায়াকে কিছু বলতে পারলি! না শুধু শুধু সময় নষ্ট করলি! কোনটা ? আথনুক ছায়াকে পাগলের মত ভালোবাসে সেটা তুষার আগে থেকেই জানে তাই তার কাছে লুকানোর কিছুই নেই। তাছাড়া এক বন্ধু আর এক বন্ধুকে এতোটাই বিশ্বাস করে যা কল্পনার বাহিরে। তুষার ইচ্ছে করলে ছায়াকে বলতে পারে আথনুক তাকে কতটুকু ভালবাসে কিন্তু আথনুক তুষারকে “Promise” করিয়েছে সে যদি ছায়াকে বলে আথনুক তাকে ভালোবাসে তাহলে তাদের বন্ধুত্ব সারা জীবনের জন্য শেষ হয়ে যাবে। তাই তুষার বার বার ছায়াকে বলতে গিয়েও বলতে পারেনা। কারণ তার মুখ বাঁধা






আথনুক তুষারকে বললো তুই চুপ করবি? তুষার বুঝতে পারছে এই মুহূর্তে আথনুকের মাথা ঠিক নেই তাই সে কথা ঘুরিয়ে বলল আম্মু বলেছে টেবিলে খাবার লাগাতে একটু দেরি হবে চল আমরা এর মধ্যে নিচে থেকে হেটে আসি। আথনুক বলল তুই যা আমি যাবনা। তুষার OK বলে চলে গেলো। আথনুক তুষারের রুমে গিয়ে তুষারের ল্যাপটপে তার পছন্দের একটা মুভি “Ramaiya Vastavaiya” ছেড়ে দেখতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষন পর ছায়া পা টিপে টিপে এসে আথনুকের পাশে বসলো। আথনুক যদিও বুঝতে পেরেছে ছায়া তার পাশে এসে বসেছে তারপরও সে না দেখার ভান করে শুয়ে মুভি দেখতে লাগলো






আথনুকের এই চুপচাপ দেখে ছায়া ভাবছে যেখানে আমার রাগ করার কথা সেখানে সে রাগ করে বসে আছে। কিন্তু ছায়া বুঝতে পারছেনা সে কোথা থেকে শুরু করবে, কারণ কিছুক্ষন আগে রুমে আথনুকের সাথে যা ঘটেছে তাতে কথা বলতে একটু লজ্জা বোধ হচ্ছে। ছায়া কোন উপায় না দেখে আথনুকের সামনে দাঁড়িয়ে তার রেশমি কালো চুল গুলো ছেড়ে চিরুনি দিয়ে আঁচড়াতে লাগল। ছায়া যদিও নিজের চুল সুন্দর করে বেণি করতে পারে তারপরও সে আথনুককে হাসানোর জন্য চুল গুলো ভুল ভাল ভাবে বেণি করছে। ছায়ার এই পাগলামি দেখে আথনুক এক সময় হাহাহাহা করে হেসে উঠলো। আথনুক পিছন থেকে ছায়ার চুল ধরে টান দিতেই ছায়া নিজেকে সামাল দিতে না পেরে আথনুকের কোলের উপর পরে গেলো। আথনুক কোনো কিছু না বুঝেই পিছন থেকে ছায়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।



খুব শীগ্রই এই গল্পের (পার্ট-১৩) পোস্ট করা হবে




Very soon will be posted (Part-13) of this story.




নোট: গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!


No comments:

Post a Comment