♥আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ জামান
(পার্ট-১৩)
ছায়া
আথনুকের কোলের উপর পড়ে যাওয়াতে আথনুক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে বিছানার দিকে গা ছেড়ে
দিল। দুজনে বিছানার উপর পড়ে যাওয়াতে ছায়ার ঘন কালো চুলগুলো দিয়ে আথনুকের মুখ
ঢেকে গেলো। আথনুক এক হাত ছায়ার পেটের
উপর রেখে আরেক হাত দিয়ে ছায়ার চুল গুলো সরিয়ে দিলো। ছায়ার চুল গুলো সরিয়ে দেয়ায় ছায়ার কোমল ঘাড়ের ছোয়া বারবার আথনুকের ঠোঁট
স্পষ্ট করছে। আথনুকের ঠোঁট যখনি ছায়ার
কোমল শরীর স্পর্শ করছে তখনি ছায়া কেঁপে উঠছে এবং এর সাথে ছায়ার শরীর শিউরে উঠছে। ছায়া কোনো কিছু বলার আগেই আথনুক সাহস করে ছায়ার
কোমল ফর্শা ঘাড়ে আলতো করে একটা চুমু দিলো। আথনুক ছায়ার কোমল ঘাড়ে আলতো করে চুমু দেয়ার পর ছায়ার অনুভুতি বোঝার
চেষ্টা করলো। আথনুক লক্ষ্য করলো ছায়ার
কোনো রিঅ্যাকশন নেই তাই সে সাহস করে ছায়াকে বুকের উপর থেকে নামিয়ে দিয়ে বিছানার উপর
শুইয়ে দিল।
আথনুক
ছায়াকে বিছানার উপর শুয়ে দেয়ার পর লক্ষ্য করলো ছায়া পূর্বের মত তার গোলাপের পাপড়ির
মত ঠোঁট দুটো কাঁপাচ্ছে এবং ঠোঁটটের আশেপাশে ঘাম গুলো জমে মুক্তোর দানার মতো জল জল
করছে। আথনুক ভাবলো সে আজকে যদি
ছায়াকে তার ভালোবাসার অনুভূতি বোঝাতে না পারে তাহলে মনে হয় আর কখনোই পারবেনা তাই আর
দেরি না করে ছায়ার কপালে আলতো করে চুমু দিল। এতেও ছায়ার কোনো রিঅ্যাকশন নেই। এবার আথনুকের সাহস আরো বেড়ে গেলো। আথনুক ছায়াকে চুমু দেয়ার জন্য ধীরে ধীরে ছায়ার ঠোটের
দিকে তার মুখটি নিতেই তুষার রুমে প্রবেশ করল। তুষার, আথনুক এবং ছায়াকে এই অবস্থায় দেখে থমকে গিয়ে বলে ফেললো Uffs!! Sorry……! মনে হয়
ভুল সময় রুমে প্রবেশ করে ফেলেছি……Please continue…!! এই বলে তুষার দরজা লাগিয়ে দিয়ে
অন্য রুমে চলে গেলো। হঠাৎ করে তুষারের আগমনে ছায়া লজ্জা পেয়ে আথনুককে তার বুক থেকে সরিয়ে দিয়ে দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ছায়া রুম থেকে চলে যাওয়ার পর আথনুক বিছানার উপর শুয়ে রইল।
ডাইনিং
রুম থেকে আথনুককে তার আম্মু ডাকছে আথনুক…..আথনুক!! অনেক রাত হয়ে গেল বাসায় যাবি না
বাবা ? মায়ের গলার আওয়াজ শুনে জবাব দিয়ে বলল আম্মু আসছি! আথনুক ঘড়ির দিকে তাকিয়ে
দেখলো রাত ৯:৩০ বাজে তাই সে আর দেরি
না করে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। আথনুক লক্ষ্য করলো ডাইনিং টেবিলে খাবার লাগানো হয়েছে এবং খাবারের মেনুতে তার পছন্দের খাবার গুলো রয়েছে যেমন: ডাল ভর্তা,
টাকি মাছের ভর্তা, চিংড়ি মাছের দোপিঁয়াজু, ইলিশ মাছ, দেশি মুরগি, গরুর মাংসের কালা
ভুনা, আরো অনেক কিছু কিন্তু এই মুহূর্তে আথনুকের কিছুই খেতে ইচ্ছে করছেনা তারপরও সে টেবিলে বসে পড়েছে। খাবার টেবিলে সবাইকে দেখা যাচ্ছে কিন্তু
ছায়াকে দেখা যাচ্ছেনা। আথনুক খাবার প্লেট নিয়ে এক হাত গালে দিয়ে আর এক হাত দিয়ে প্লেটের
চার পাশে ঘুরাচ্ছে আর মনে মনে ভাবছে ছায়াকে দেখা যাচ্ছে না কেন।
আথনুক
ভাবছে আজকে আমার জন্মদিন উপলক্ষে কোথায় ছায়া আমাকে খাবার তুলে দেবে সেটা না করে সে কোথায় যেন ঘরের কোনে বসে রয়েছে। আথনুক তুষারকে জিজ্ঞেস করলো
তুষার ছায়া কোথায়? উত্তরে তুষার বললো আছে হয়তোবা কোনো এক ঘরে। তুষারের কথা শুনে মনে হচ্ছে সে তার উপর রেগে আছে। আথনুক খাবার টেবিল থেকে
উঠে পড়ল। তুষার ব্যাপারটা বুঝতে পেরে
আথনুককে জিজ্ঞেস করলো খাবার রেখে তুই আবার কোথায় চললি? দেখি ছায়া কোথায়! ছায়া ওর রুমে
আছে, তুই ডাক দিলেন ? দিয়েছিলাম ও বলেছে ওর খিদে নেই পরে খাবে, পরে খাবে মানে ? আমরা সবাই এখানে খাচ্ছি আর ও পরে খাবে কেন ? জানিনা তুই গিয়ে জিজ্ঞেস কর।
আথনুক
ছায়ার রুমে প্রবেশ করে দেখে ছায়া গুটিসুটি মেরে বিছানায় শুয়ে রয়েছে। আথনুক ছায়ার পাশে বসে ছায়াকে
জিজ্ঞেস করলো তুমি নাকি ভাত খাবেনা ? হ্যা! কেন? শরীরটা ভালো লাগছে না তুমি খেয়ে নাও
আমি পরে খাব। আথনুক বললো আমার সাথে একটু
খাবে চলো…. ছায়া আথনুকের হাত চোটকে ফেলে দিয়ে চোখ গরম করে বললো আমি বললাম না আমার
ভালো লাগছেনা তারপরও কেন ডাকছো? আথনুক ছায়ার ব্যবহারে ভীষণ কষ্ট পেয়ে রুম থেকে বেরিয়ে
তুষারের রুমে গিয়ে তার ব্যাগ নিয়ে কাউকে কোনো কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আম্মুকে বললো
আম্মু তাড়াতাড়ি খেয়ে নিচে এসো আমি নিচে অপেক্ষা করছি। আথনুক নিচে নেমে একটা ট্যাক্সি
দাঁড় করিয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে পায়চারি করছে। ঠিক পাঁচ মিনিট পর ছায়া তুষার এবং আম্মু নিচে নেমে আসলো। আথনুক আড়া আড়ি ভাবে লক্ষ্য করলো ছায়ার হাতে একটা বড় হট ক্যারিয়ার। আথনুক ওদের সবাইকে দেখে ট্যাক্সি ক্যাবে উঠে বসলো। ছায়া বারবার আথনুকের সাথে
কথা বলার চেষ্টা করলে কিন্তু আথনুক ছায়াকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আম্মুকে তারা দিতে
থাকলো আম্মু চলো….. অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে এই বলে তুষারের কাছে বিদায় নিলো। ছায়া আথনুকের পাশে গিয়ে
দাড়াতেই আথনুক ট্যাক্সির গ্লাস তুলে দিয়ে চালককে বললো চলুন। ট্যাক্সির চাকা ঘুরতে শুরু করল। ছায়া তার চোখ দুটো ভিজে
পাশে দাঁড়িয়ে রইলো।।
No comments:
Post a Comment