♥আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ জামান
(পার্ট-১৫)
আথনুক
যখন মন দিয়ে ছায়ার পাঠানো এসএমএস গুলো পড়ছিলো তখন তার মনের অজান্তে চোখ দিয়ে জল ঝরছিলো। কিন্তু আথনুক যখন সে সর্বশেষ এসএমএস টি ওপেন করলো তখন সে একটু চমকে উঠলো এসএমএস
টিতে লেখা ছিল “আমি লাজ লজ্জা ভেঙ্গে বললাম আমি তোমাকে আমার মনের কথা খুলে বলতে চাই
দয়া করে আমার সাথে একটু কথা বলো” আথনুক এসএমএস টি পড়ার পর আর এক মুহূর্ত দেরি করল
না, সে ঘড়ির দিকে না তাকিয়ে ছায়ার নাম্বারে কল ব্যাক করলো। কারণ আথনুক ছোট বেলা থেকে
শুনে এসেছে শুভ কাজে দেরি করতে নেই তাছাড়া ছায়া তার মনের কথা প্রায় ৯৯ শতাংশ বলে দিয়েছে। আথনুক ভাবলো ছায়া একজন মেয়ে
হয়ে যদি ৯৯ শতাংশ তার মনের কথা প্রকাশ করতে পারে তাহলে আমি একজন ছেলে হয়ে ছায়াকে আমার
মনের কথা খুলে বলতে পারবোনা কেন।
কিন্তু দুঃখের বিষয় ছায়া ফোন ধরল না। আথনুক আবারো রিডাইল করলো কিন্তু কোনো লাভ হলোনা। ছায়ার
ফোনে রিং হয়ে যাচ্ছে কিন্তু রিসিভ করছে না। আথনুক এভাবে চার পাঁচবার
ফোন দেয়ার পর ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখেছে রাত তখন প্রায় ৩:৪৫ বেজে গিয়েছে। আথনুক ভাবলো
ছায়া হয়তোবা ঘুমিয়ে পড়েছে তাই ফোন ধরছেনা। আথনুক চিন্তা করলো আর ফোন
দেয়া ঠিক হবেনা বরং ছায়াকে একটি এসএমএস করলে কেমন হয়। আথনুক ছায়াকে
একটি এসএমএস করলো।
“তোকে নিয়ে ভাবতে আমার লাগে অনেক ভাল,
তুই আমার জীবন সাথী দুই নয়নের আলো।
চোখ দুটো তোর টানা টানা কাজল কালো আঁখি,
কেউ তোরে চুরি করে তাই ভয়ে ভয়ে থাকি।
চাঁদের চেয়েও সুন্দর তোর ঐ মায়াবী হাসি,
সত্যি করে বলছি তোকে অনেক ভালবাসি”।
আথনুক
ভাবলো ছায়া যেহেতু তার মনের কথা ৯৯ শতাংশ বলে দিয়েছে তাই সে ১০০ শতাংশ তার মনের কথা
এসএমএস এর মাধ্যমে ছায়াকে বলে দিলো। “আমি
তোমাকে ভালোবাসি” যদিও এই কথাটি আথনুকের ছায়ার সামনে দাঁড়িয়ে
হাতে একটি লাল গোলাপ নিয়ে ছায়াকে বলা উচিত ছিলো কিন্তু সময় আর ভয়ের কারণে এভাবে বলতে
বাধ্য হলো। তারপরও আথনুক চায় রাতের বেলা ছায়ার
এসএমএস এর উত্তর না দেওয়াতে ছায়া যে কষ্ট পেয়েছে তাতে এই এসএমএসটি দিলে ছায়া হয়তোবা
খুশি হবে।
আথনুক
এসএমএসটি করার পর মোবাইল বালিশের পাশে রেখে বিছানায় শুয়ে ঘড়ির সেকেন্ডের কাটা গুনতে
থাকলো এবং এসএমএস এর উত্তরের অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু সে
কোনো মতে বিছানায় শুয়ে থাকতে পারছেনা কারণ তার টেনশন হচ্ছে
ছায়া তার এসএমএস পড়ার পর উত্তরে কি বলবে। আথনুক বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় গিয়ে কিছুক্ষণ পায়ে-চারি করে ইজি চেয়ারে
বসে পড়লো। আথনুক ইজি চেয়ারে বসে ভাবছে
ছায়া তার কথায় রাজি হলে সবাই যেভাবে তাদের ভালোবাসার মানুষকে “Candle Light” জ্বালিয়ে
এক পা হাঁটু ভেঙ্গে বসে এক হাতে লাল টুকটুকে গোলাপ ফুলের তোড়া নিয়ে ব্লেজারের পকেট
থেকে রিং বের করে অন্য হাতে রিং নিয়ে দুই হাত ছড়িয়ে দিয়ে চিৎকার করে “I Love
You” বলে প্রপোজ করে ঠিক সেভাবে প্রপোজ করবে।
রাত যতই শেষ হয়ে আসছে আথনুকের ততই হার্টবিট বেড়েই
যাচ্ছে, এই বুঝি ছায়া এসএমএস এর উত্তর দিলো কিন্তু দেখতে দেখতে রাত ভোর হয়ে গেল অথচ ছায়ার কোনো খবর নেই। আথনুক ইজি চেয়ারে বসে ভাবতে ভাবতে
কখন যেন চোখ লেগে এসেছে সে বলতে পারেনা। হঠাৎ করে ঠিক ৫:৪০ এ আথনুকের মোবাইলে একটি
এসএমএস এলো। আথনুক পাগলের মতো ইজি চেয়ার
থেকে উঠে বারান্দা থেকে ছুটে গিয়ে রুমে বালিশের পাশে রাখা মোবাইল টার কাছে গিয়ে থমকে
দাড়ালো কিন্তু! আথনুকের হাত কাঁপছে সে কোনো মতেই মোবাইল ধরার সাহস পারছেনা কারণ তার
ভীষণ ভয় হচ্ছে না-জানি ছায়া এসএমএস এ কি লিখেছে।।
No comments:
Post a Comment