Saturday, September 29, 2018



আমার ভালবাসা বুঝলেনা

আরিফ জামান

(পার্ট-১৯)



একে-তো রাতে ছায়ার সাথে ঝগড়া, তার মধ্যে আবার সারারাত ছায়ার চিন্তায় রাত জাগা, এখন আবার ছায়া ও তুষার দুজনের ফোন বন্ধ! এই সব কিছু মিলিয়ে আথনুকের হাইপার টেনশন বেড়ে গিয়েছে আর এই জন্য সে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছেপ্রায় এক ঘন্টা পর আথনুকের জ্ঞান ফিরে এলোআথনুক চোখ খুলে লক্ষ্য করলো রামিশা পাশে বসে আমার কপালে রুমাল দিয়ে ঠান্ডা বরফের পানির শেক দিচ্ছেরহমান আংকেল একজন ভদ্র লোকের সাথে কথা বলছেএকই ভাবে অনেকক্ষণ শুয়ে থাকার কারণে আথনুকের পিঠে ব্যথা অনুভব হলো তাই সে একটু পাশে ফেরার চেষ্টা করলো কিন্তু পাশ ফিরতে গেলে ডান হাতটা কেমন যেন ভার ভার অনুভব হলো মনে হলো কেউ তার হাতটা বেঁধে রেখেছেআথনুক ভালো করে লক্ষ্য করে দেখলো তার ডান হাতে স্যালাইন দিয়ে রেখেছেরামিশা আথনুকের নড়াচড়া দেখে রহমান আংকেলকে ডাক দিলআব্বু…....! আথনুকের জ্ঞান ফিরেছেরহমান আংকেল আমার কাছে এলো এবং তার সাথে একই ফ্লাটের ডাক্তার নাজিম আংকেল ও এলেনরহমান আংকেল আমার কাছে এসে বসে আমাকে বললেন আব্বু এখন তোমার কেমন লাগছে? জ্বি আংকেল ভালো, রহমান আংকেল এই কথা শুনে একি নিঃশ্বাসে বলে ফেললো আব্বু আমি তোমার আম্মুর কাছে সবকিছু শুনেছি তোমার আম্মু আসছেন তুমি কোনো চিন্তা করোনা

রহমান আংকেল কি বললেন আর না বললেন আথনুক সেটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত না তার চিন্তা শুধু একটাই “ছায়া এবং তুষারের পরিবারের লোকজন কোথায়”!! ২৪ ঘন্টার মধ্যে দুজনের ফোন বন্ধ তার মধ্যে আবার বাসা লক করা এটা কিভাবে সম্ভব!! কলিং বেলের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে রহমান আংকেল এর কথা হিসাবে এখন আম্মু আশার কথা তাছাড়া আমার মন কেন জানি বলছে মনে হচ্ছে আম্মু এসেছেকলিং বেলের আওয়াজ শুনে রামিশা দরজা খুলতে গেলআমার ধারণায় ঠিক! কান্নার আওয়াজ শুনে বোঝা যাচ্ছে আম্মু এসেছেমা এসেছে এতে আথনুক মোটেও খুশি নয়, কারণ আথনুক ভালো করে জানে তার মা এখন তাকে এমন ভাবে বকা দিবে যতক্ষন পর্যন্ত তিনি হাপিয়ে না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে বকতে থাকবেআথনুক এটাও জানে তার মা তাকে ভিষন ভালবাসে তাই অল্পতেই তার কিছু হলেই তাকে এভাবে বকেআথনুক রহমান আংকেলের উপর একটু নারাজ কারণ এই ছোট্ট বিষয়ের জন্য আম্মুকে খবর দিয়েছে রহমান আংকেল জানেন না আম্মু অল্পতেই ভেঙ্গে পরেআর আম্মুর চোখে পানি দেখলে আমি মোটেও ঠিক থাকতে পারিনা

যেই কথা সেই কাজ আম্মু রুমে প্রবেশ করে প্রথমেই বকা শুরু!! আথনুক তোকে বার বার নিষেধ করেছি তুই রাত জাগবিনা তারপরও তু্ই কথা শুনলি না এখন কি কাজটা ভালো হয়েছে?  আল্লাহ না করুক তুই যদি বাইক চালানোর সময় মাথা ঘুরে পরে গেলে কি অবস্থাটা হতো বল?  আথনুক এর মধ্যে তিনবার সরি বলে ফেলেছে কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে নাকারণ মা এই মুহূর্তে ভিশন রেগে আছেমা ছেলেকে বকা দেয়া দেখে রহমান আংকেল আম্মুকে বারবার সান্তনা দিয়ে বলছে ভাবি এই বয়সে ছেলে মেয়ে এরকম দুষ্টুমি করবে…. আর বকা দিয়েন নাতো এবার একটু শান্ত হয়ে বসুনরহমান আংকেলের শান্তনাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না তাই আথনুক ঠিক করলো আম্মুকে থামানোর একটাই উপায় আছে, এইটা বললে আম্মু একদম চুপ হয়ে যাবেপরিস্থিতি ঘোলা হবার আগেই আথনুক তার আম্মুকে ফুল এন্ড ফাইনাল কথাটি বলে ফেললোদেখো আম্মু! তুমি যদি এই মুহূর্তে চুপি না করো তাহলে আমি এই মুহূর্তে বাসা থেকে বেরিয়ে যাবোআথনুকের কথাটা তার মায়ের কাছে কারেন্টের মতো কাজ করছেআথনুকের এই কথা শুনে তার আম্মু একদম চুপ হয়ে গেল


এর মধ্যে রামিশা একগাদা নাস্তা বানিয়ে নিয়ে এসেছেআমরা এখানে লোক মাত্র চারজন অথচ নাস্তা ট্রলি ভরাআথনুকের মাথায় একটা বুদ্ধি এলো, ভালো লাগছে না বলে শুধু রামিশাকে আমার পাশে রেখে বাদবাকি সবাইকে ডাইনিং রুমে পাঠিয়ে দিয়ে রামিশার কাছ থেকে জানা যাবে ছায়া এবং তুষার এরা সবাই কোথায়আথনুক একটু চালাকি করে বললো আম্মু আমার ভীষন ঘুম পাচ্ছে আমাকে একটু একা থাকতে দাওআর রামিশাকে বলো আমার মাথায় একটু জল পট্টি দিতেআথনুকের এই কথা শুনে তার মা একটু রেগে গেলেন। “রামিশা কি তোর চাকর? সে তোর কপালে জল পট্টি দিয়ে দেবে!!” রামিশা লাগবেনা আমি দিচ্ছি!! রামিশা এই কথা শুনে বলে ফেললো আল্লাহ আন্টি আপনি এমনিতেই অনেক জেম ভেজ্ঞে এসেছেন আপনি জল পট্টি দিবেন!! আপনি বরং ডাইনিংয়ে গিয়ে আব্বু, নাজিম আংকেল, এবং নাজিম অংকের মিসের, সাথে নাস্তা করেন আমি ওকে জল পট্টি দিয়ে দিচ্ছিআল্লাহ আথনুকের মনের আশা পূরণ করেছেরামিশার কথা মতো সবাই ডাইনিং রুমে চলে গেলোআথনুক রামিশাকে জোরে শোরে একটা ধন্যবাদ দিলোরামিশা বুঝতে পারছে আথনুক তাকে কেন ধন্যবাদ দিয়েছে কিন্তু! আথনুক রামিশার কাছে যে জিনিসটি জানতে চাচ্ছে এই মুহূর্তে রামিশার পক্ষে কোনো মতে আথনুককে বলা সম্ভব না।।

খুব শীগ্রই এই গল্পের (পার্ট-২০) পোস্ট করা হবে এবং পার্ট-২০ তে বিশেষ আকর্শন থাকবে

Very soon will be posted (Part-20) of this story. 

নোট: গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!


No comments:

Post a Comment