Saturday, September 29, 2018




আমার ভালবাসা বুঝলেনা

আরিফ জামান

(পার্ট-১৮)


রাতের বেলা ছায়ার এতগুলো ফোন আবার হঠাৎ করে ছায়া এবং তুষার দুজনার ফোন এক সাথে বন্ধ আথনুকের কাছে বিষয়টা সুবিধার মনে হচ্ছেনাছায়া হয়তোবা আমার সাথে অভিমান করে ফোন বন্ধ করে রেখেছে কিন্তু তুষারের ফোন বন্ধ কেনসিগন্যাল ক্লিয়ার হওয়ার কারণে পিছনের গাড়ি কন্টিনিউ হর্ন দিয়েই যাচ্ছে কিন্তু আথনুক ট্রাফিক সিগন্যালে দাঁড়িয়ে একটু সময়ের জন্য ভাবনার দেশে হারিয়ে গিয়েছিলসব আজেবাজে চিন্তা ভাবনা তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিলো আথনুক নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলনা তার সাথে কি ঘটতে চলেছেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্ট পিছন থেকে আথনুকের গায়ে হাত দিয়ে ডাক দিল ভাইয়া…. সিগন্যাল ক্লিয়ার গাড়ি আগে বাড়ানআথনুক চমকে উঠে পিছনে তাকিয়ে দেখে সবাই তাকে গালি দিচ্ছে “ও……ভাই! সিগন্যালে ঘুমিয়ে পড়েছেন নাকি ? রাতে বাসায় ঘুমান নাই ? কোত্থেকে যে আসে এই সব বুঝিনা! গাড়ি আগে বাড়ান!! পাশের এক ড্রাইভার টিটকারি করে বলেই ফেললো “ভাই বড় লোকের পোলাপানের কাজেই এই রকম রাতে মধ গাঞ্জা খেয়ে ফুর্তি করে আর দিন হলে সিগন্যালে ঘুমিয়ে পড়ে” আথনুক মুখ বুঝে সবার গালি গুলো হজম করলো কারণ আথনুক ভালো করে জানে কথায় কথা বাড়ে আর কথা যখন খুব ভয়ানক আকার ধারণ করে তখন ঝগড়া বিবাদ শুরু হয় তাই সে কথা না বেড়ে আবারও তার গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিলো

আথনুকের বাইক যখন তুষারের বাসার গেটে গিয়ে দাঁড়ালো তখন ঘড়িতে বাজে প্রায় 12:35 pmআথনুক বাইক পার্কিং করে সিঁড়ি দিয়ে ভয়ে ভয়ে উপরে উঠলো কিন্তু মেইন ডোর এর সামনে গিয়ে কলিং বেল চাপ দেয়ার কোনো মতেই সাহস হচ্ছে নাআথনুক এর আগে যখন তুষারের বাসায় এসেছে তখন তার এরকম ভয় হয় নাই কিন্তু আজকে তার এতো ভয় হচ্ছে কেন সে কিছুতেই বুঝতে পারছেনাআথনুক সাহস করে কলিং বেল চাপ দিলো কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ এলোনাআথনুক আবারো কলিং বেল চাপ দিলো কিন্তু কোনো সাড়া শব্দ নাইভেতর থেকে কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়াতে আথনুকের হাইপার টেনশন বাড়তে লাগলোহাইপার টেনশনের কারণে আথনুকের সারা শরীর ঘেমে পানি পড়ছেআথনুক এবার কলিং বেল চাপ না দিয়ে সাহস করে দরজার হেন্ডেল ধরে ঘুরানোর চেষ্টা করলো কিন্তু কোনো মতেই দরজার হেন্ডেল ঘুরছেনা মনে হচ্ছে চাবি দিয়ে দরজা লক করা হয়েছেআথনুক বুঝতে পারছেনা তার সাথে কি হচ্ছে! আথনুক প্রথমে ছায়ার মোবাইল অফ পেলো, তারপর তুষারের মোবাইল অফ, এখন আবার তুষারের বাসার দরজা লক, আসলে হচ্ছেটা কি!!

আথনুক এসব কথা ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হয়ে যখন দরজার পাশে সিঁড়িতে বসে পড়লো ঠিক তখনি পাশের বসার “রহমান আংকেল” টুপি মাথায় দিয়ে নামাজ পড়তে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হলোরহমান আংকেল “এই ফ্ল্যাটের মালিক” রহমান আংকেলর পরিবারের মোট সদস্য চার জনএদের মধ্যে রহমান আংকেলর স্ত্রী বছর তিনেক আগে মারা গেছেনএক ছেলে দুই মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেনরহমান আংকেল একটা সরকারী চাকুরী করতেন গতবছর তিনি রিটায়েড করেছেনরহমান আংকেলর ছোট ছেলে “রাফসান” অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশুনা করছে আর মেয়ে দুটোর মধ্যে বড় মেয়ে “রামিশার” এক আর্মি অফিসারের সাথে বিয়ে হয়েছিল রামিশার স্বামী সংসার ভালোই কাটছিলো কিন্তু রামিশার ঘরে যখন পরীর মত ফুটফুটে একটি মেয়ে জন্ম গ্রহণ করে ঠিক তখনি এক রোড এক্সিডেন্টে রামিসার স্বামী মারা যায়রহমান আংকেল রামিশাকে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়ার জন্য অনেক কয়বার চেষ্টা করেছিল কিন্তু রামিশা তার মেয়ে “আয়রা” এর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে দ্বিতীয় বিয়ে করে নাই রামিশা এখন তার মেয়ে আয়রা-কে নিয়ে এই বাসায় থাকে রহমান আংকেলর দ্বিতীয় মেয়ে “রায়না” হোস্টেলে থেকে ডাক্তারি পড়ছে মাঝে মাঝে  সে ছুটি নিয়ে বেড়াতে আসেবলতে গেলে এই বাসায় এখন শুধু রহমান আংকেল, রামিশা, আর তার মেয়ে আয়রা থাকে

রহমান আংকেল আমাকে ভালো করে চেনেন কারণ আমি যখন তুষারের বাসায় আসতাম তখন রামিশা তার মেয়ে আয়রা-কে নিয়ে এসে আমাদের সাথে সময় কাটাতোবলতে গেলে আমরা বন্ধুর মত মজা করতামরহমান আংকেল আমার এই অবস্থা দেখে জিজ্ঞেস করলো আরে বাবা আথনুক তুমি এখানে এভাবে বসে আছো কেনো! আর তোমার শরীরের এ-কি অবস্থা! তোমার শরীর ঠিক আছেতো ? আমি কোনো কিছু বলার আগে মাথা ঘুরে পড়ে গেলাম শুধু এত টুকু শুনতে পেলাম রহমান আংকেল রামিশা-কে ডাক দিল  রামিশা….জলদি বাহিরে আয় আথনুক মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছে…..।।

খুব শীগ্রই এই গল্পের (পার্ট-১৯) পোস্ট করা হবে এবং পার্ট-১৯ তে বিশেষ আকর্শন থাকবে


Very soon will be posted (Part-19) of this story. 


নোট: গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!


No comments:

Post a Comment