♥ আমার ভালবাসা বুঝলেনা
♥
আরিফ জামান
(পার্ট-২৮)
ছায়ার ভালবাসা আথনুক এর জীবনে এখন কঠিন পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আথনুক জীবনে এই প্রথম কোনো একটি মেয়েকে ভালোবেসে ছিলো কিন্তু তার দুর্ভাগ্য ভালোবাসা পাওয়ার আগেই হারিয়ে গিয়েছে।
আথনুক
প্রেমের তৌরি সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে ঠিকই কিন্তু ভালোবাসার তৌরি ঘাটে ভেড়ার আগেই মাঝ
দরিয়ায় ডুবে গিয়েছে। আথনুক এতদিন গুরুজনদের কাছে শুনে এসেছে ভালোবাসা একতরফা হয় না। ভালোবাসা হয় ঠিক নেগেটিভ পজেটিভ মিলিত হলে যেভাবে আধার ঘরে আলো জ্বলে ওঠে ঠিক সেভাবে। আসল ভালোবাসা পেতে হলে দুটি মন একত্রীত হওয়া খুব জরুরি। নয়তো একটা ভুলের জন্য সারা জীবন কাঁদতে হয়।
আথনুক আজকে বুঝতে পারছে গুরুজনেরা যে কথা গুলো বলে গিয়েছিলেন সেগুলো ঠিক বলেছেন।
আথনুক আজ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে
ভেবে চিন্তে কোনো সিদ্ধান্ত না নিলে কি পরিণতি হয়। আথনুক ছোট বেলা থেকে সব কিছু সেক্রিফাইজ করে এসেছে আজ সেই জিনিসটা তার ভালোবাসার সামনে বাধা হয়ে বিশাল আকৃতির দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আথনুক এর এখন মনে হচ্ছে কারো জন্য তাকে সেক্রিফাইজ করতে হবে। আথনুক বিছানায় শুয়ে যখন এইসব কথা ভাবছিলো তখন তার মনের অজান্তেই চোখ দিয়ে জল পরে বালিশ ভিজে যাচ্ছিলো। এই ভালোবাসা হলো আজব জিনিস! কেও পাগলের মতো ভালোবাসে
ভালবাসার মানুষকে পায়না আর কেও ভালো না বেশে পায়।
সেহরি খাওয়ার পর
রামিশা গভীর
ঘুমে হারিয়ে গিয়েছে। আথনুক বিছানায় শোয়া থেকে উঠে বসে রামিশার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবছে। মেয়েদের মধ্যে কত তফাৎ এক, ছায়া আমার ভালোবাসার মানুষ হয়েও সে আমাকে বুঝতে পারেনা, আর এক,
রামিশা আমার কেউ না হয়েও আমার কষ্ট বুঝতে পারে।
আথনুক রামিশার মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক মায়া অনুভব করছে।
রামিশার মুখের উপর চুল গুলো এসে অর্ধেকটা মুখ ঢেকে গিয়েছে।
ফ্যানের বাতাসে
চুল গুলো মুখের উপর এসে রামিশার ঘুমের সমস্যা করছে।
আথনুক আস্তে করে রামিশার মুখ থেকে চুল গুলো সরিয়ে টেবিলে রাখা রাবার ব্যান্ড দিয়ে চুল গুলো বেঁধে দিল। চুল বাঁধার সময়
রামিশার একটু নড়েচড়ে উঠলো।
আথনুক একটু ঘাবড়ে গিয়ে চুপ করে বসে রইলো। রামিশা যেভাবে নড়েচড়ে উঠেছে তাতে আথনুক এর মনে হচ্ছে রামিশা সজাগ।
রামিশা সজাগ কিনা তা নিশ্চিত হতে সে রামিশাকে নিচু গলায় ডাক দিলো। আথনুক এর ডাকে রামিশা কোনো সাড়া দিল না। রামিশা নাইট ড্রেস পড়াতে নাইট ড্রেস এর এক অংশ হাঁটুর উপরে উঠে গিয়েছে। আথনুক যখন তার পাশে থাকা চাদরটা রামিশার গায়ে জড়িয়ে দিতে গেলো তখন রামিশার পায়ের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল।
রামিশা তার পায়ে সুন্দর করে নেল পালিশ দিয়েছে, এবং ডান পায়ে পায়েল পড়েছে।
আথনুক যখন ছায়ার বাসায় যেত ছায়া ঠিক একই ভাবে
হাতে পায়ে নেইল পলিশ দিয়ে নুপুর পরে আথনুক এর সামনে আসত।
আর আথনুক হাতে পায়ে নেইল পলিশ দেয়া, পায়েল বা নুপুর পরা ভীষণ পছন্দ করে। আথনুক রামিশার পায়ে নেইল পলিশ আর পায়েল দেয়া দেখে লোভ সামলাতে পারল না তাই সে আলতো করে রামিশার পায়ে হাত দিলো।
আথনুক রামিশার পায়ে হাত দিয়ে তার পা থেকে পায়েলটা খুলে ফেললো।
আথনুক ছায়াকে দিবে বলে এক জোড়া স্বর্ণের নুপুর বানিয়ে ছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিণতি আর সময়ের অভাবে সেটা তাকে দিতে পারে নাই। আর তাই আজও সেই নুপুর আথনুক এর ব্যাগে বন্দি হয়ে পরে আছে। আথনুক বিছানা থেকে নেমে ব্যাগের চেইন খুলে নুপুরের প্যাকেট খুলে নুপুর বের করলো।
আথনুক এর ব্যাগে বন্দি হয়ে থাকা ছায়ার সেই নূপুর আজও চক চক করছে। আথনুক নুপুর হাতে নিয়ে বিছানায় গিয়ে আবার বসে পড়ল।
আথনুক রামিশার দুই পা তার রানের উপর নিয়ে নুপুর পরিয়ে দিলো।
আথনুক রামিশার পায়ে নুপুর পড়ানোর সময় একটু অবাক হয়ে গেল। আথনুক যখন রামিশার পা থেকে পায়েল খুলছিল তখন রামিশা নড়েচড়ে উঠেছিল কিন্তু এখন দুই পা রানের উপর নিয়ে নুপুর পরিয়ে দেয়ার সময় কোনো নড়াচড়া করে নাই। আথনুক রামিশাকে নুপুর পরিয়ে চাদর দিয়ে পা ঢেকে দিয়ে বিছানা থেকে নেমে সোজা বাথরুমে গেলো।।
No comments:
Post a Comment