Saturday, September 29, 2018



♥ আমার ভালবাসা বুঝলেনা ♥

আরিফ জামান

(পার্ট-২৩)


মনের ভিতর কষ্ট লুকিয়ে মানুষের সাথে হাসি মুখে কথা বলা টা যেন একটা বিরাট চ্যালেঞ্জ এর বেপারযদি সেটা কাওকে না পাওয়ার কষ্ট হয় তাহলে তো আর কোন কথাই নেইআথনুকের পরিস্থিতি ঠিক একই রকম হয়েছেছায়াকে হারানোর কষ্ট মনে চেপে হাসি মুখে রামিশার সাথে কথা বলতে হচ্ছেমানুষ দুই দিনের এই পৃথিবীতে এসে অফুরন্ত এক ভালোবাসার মায়া জালে আটকা পরেএই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ তার নিজের উদ্দেশ্যকে টার্গেট করে কাজ করে কিন্তু এদের মধ্যে যারা ভাগ্যবান একমাত্র তারাই সফলতা অর্জন করে স্বপ্নের চাবিকাঠি হাতে পায় আর যাদের ভাগ্য আথনুকের মতো হয় তাদেরকে এভাবেই মনের ভিতর কষ্ট চেপে রেখে মানুষের সাথে হাসি মুখে কথা বলতে হয়এখানে একটা কথা আছে "যাকে ভালোবাসো তাকে পেতে হবে" এটা কিন্তু কোথাও লেখা নাই কারণ মহান আল্লাহ পাক প্রতিটি মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়ার সময় জোড়া বানিয়ে পাঠিয়ে দেনআর এই নিয়ম ভাঙ্গার ক্ষমতা কোনো মানুষের নেইতাই আথনু ধরে নিয়েছে ছায়াকে ভালোবাসা তার কপালে লেখা থাকলেও তাকে বিয়ে করে তার সাথে ঘর সংসার করবে এই জিনিসটা তার কপালে লিখা নাই আর তাই হয়তোবা আজ ছায়ার সাথে রবিনের বিয়ে হচ্ছে

গতকাল রামিশার সাথে কথা বলে রাতের বেলা বাসায় এসে ছায়ার চিন্তায় আথনু মোটেও ঘুমাতে পারে নাইসকাল বেলা গোসলে গিয়ে আথনু ছায়ার কথা ভাবতে ভাবতে বাথট্যাবে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে বলতেই পারে নাহঠাৎ বাথরুমের দরজায় নক করার আওয়াজ শুনে আথনুকের ঘুম ভেংগে গেলআথনু শাওয়ার বন্ধ করে ভেতর থেকে চিল্লিয়ে বলল কে??? বাহির থেকে “আয়শা বেগম” মানে আমার আম্মু ডাকছে, বাবা আথনুক…….! তুই এতক্ষণ বাথরুমে কি করছিস তাড়াতাড়ি বের হয়ে আয় তোর ফোন বাজছে, রামিশা তোকে বারবার ফোন করছে….! ঠিক আছে আম্মু বের হচ্ছিআজকে রামিশার সাথে আমার ছায়ার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার কথা রামিশা হয়তোবা এই জন্য বারবার ফোন করছেআথনু শাওয়ার শেষ করে বাথরুম থেকে বের হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে অবাক! রামিশা এর মধ্যে ১২ টা কল দিয়েছেআথনু রামিশাকে কল ব্যাক করলোওদিক থেকে রামিশা ফোন রিসিভ করে বললো ভাইয়া আমি রেডি হয়ে আপনার জন্য অপেক্ষা করছি আপনি কোথায় ? আর এতক্ষন
ধরে আমি আপনাকে ফোন করেই যাচ্ছি আপনি ফোন রিসিভ করছেন না কেন ? দুঃখিত আপু আমি গোসলে ছিলাম তাই আপনার ফোন ধরতে পারি নাইবুঝতে পেরেছি, আপনি কখন আসবেন ? এইতো আমি নাস্তা করেই বের হবোঠিক আছে তাড়াতাড়ি আসেন



রামিশার সাথে কথা শেষ করতেই আম্মু রুমে প্রবেশ করলআম্মু কোনো কিছু না ভেবেই প্রথমে বললো “তোর কোথাও যাওয়ার দরকার নেই” যে মেয়ের জন্য তুই দিন রাত এক করে হাসপাতালে ওর সেবা যত্ন করার পরেও সে তোর জন্য বিন্দু মাত্র চিন্তা না করেই অন্য ছেলেকে বিয়ে করছে তার কথা ভাবার বা তার কাছে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেইতুই বাসায় থাক আমি তোর মামার সাথে কথা বলে তোকে লন্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া বেবস্থা করছিআম্মু এক নিশ্বাসে সব কথা বলে হাপিয়ে গিয়ে আমার বিছানায় বসে পড়লোমায়ের চোখে পানি দেখে আথনু মায়ের পায়ের পাশে ফ্লোরে বসে মা-কে সান্তনা দিয়ে বলল আম্মু তুমি শুধু শুধু আমাকে নিয়ে চিন্তা করছোআমার কিছু হয় নাই, আমি সম্পূর্ণ ঠিক আছিদুনিয়াতে আমি আগে এসেছি না তুই আগে এসেছিস? আমি তোর গর্ভধারিনী “মা” আর আমি আমার ছেলের মুখ দেখলেই বুঝতে পারি আমার ছেলে কষ্টে আছে না সুখে আছেআথনু মায়ের কথা শুনে ছায়ার লেখা সেই চিঠির কথা মা-কে বলতে লাগলোআম্মু তুমি ছায়াকে ভুল বুঝিও না, ছায়া অনেক ভালো একটা মেয়ে, আম্মু ছায়া রবিনকে বিয়ে করছে পরিস্থিতির শিকার হয়ে, আম্মু ছায়া এই জীবনে যত কষ্ট সহ্য করেছে ওর জায়গায় অন্য মেয়ে হলে অনেক আগেই আত্মহত্যা করতো

“আয়শা বেগম” ছায়ার চিঠি পরে হতভম্ব হয়ে নিজেই বলে ফেললো আথনু তুই যে ছায়ার গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সেজেছিস তো, কি নিয়ে যাবি ?  কিছু কিনেছিস! না খালি হাতে জাবি ? এখনো কিছু কিনি নাই, ভাবছি এত দূর থেকে বয়ে না নিয়ে ওর এলাকায় গিয়ে কিনবোআচ্ছা তোর সাথে কি রামিশাও যাবে ? হুম, তুমি কিভাবে বুঝলা রামিশা আমার সাথে যাচ্ছে ? সকালে তোকে বারবার ফোন করছিল তাই ভাবছিলাম সেও হয়তোবা তোর সাথে যাচ্ছেরামিশা নিজে থেকেই আমার সাথে যাওয়ার জন্য জোর করছিল তাই আমি বললাম ঠিক আছে নিয়ে যাবোএর মধ্যে রামিশা আবারো ফোন করলোআথনু লাফ দিয়ে উঠে আম্মুকে বললো আম্মু তুমি জলদি আমার নাস্তা রেডী কর আমি এর মধ্যে আমার ব্যাগটা গুছিয়ে নিচ্ছিছেলের কথা শুনে “আয়শা বেগম” আথনুকের রুম থেকে বের হয়ে নাস্তা রেডি করতে চলে গেলোআথনু দ্রুত উঠে যতটুকু কাপড় প্রয়োজন ঠিক ততটুকু কাপড় ব্যাগে ভরে নিয়ে ডাইনিং রুমে চলে গেলআথনু নাস্তা করে মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ঠিক সকাল ১০: ৩০ বাসা থেকে বের হয়ে রামিশার বাসার উদ্দেশে রওয়ানা দিলো।।


খুব শীগ্রই এই গল্পের (পার্ট-২৪) পোস্ট করা হবে এবং পার্ট-২৪ তে বিশেষ আকর্শন থাকবে


Coming soon will be posted (Part-24) of this story. 


নোট: গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষেধ!!
 


No comments:

Post a Comment